ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি ইসরায়েলি সেনার

গাজার মানবিক সংকট এখন ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। খাদ্য, পানি এবং চিকিৎসাসেবার অভাবে ধুঁকছে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ। এর মধ্যে সম্প্রতি এক ভয়াবহ অভিযোগ সামনে এসেছে—ত্রাণ সংগ্রহ করতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালানোর আদেশ দেওয়া হয়েছিল ইসরায়েলি সেনাদের পক্ষ থেকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক অডিও ক্লিপে দাবি করা হয়েছে, একজন ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তা তার ইউনিটকে নির্দেশ দেন:
“যদি তারা এগিয়ে আসে, গুলি করো।”
এই অডিও ক্লিপটি শোনা মাত্রই বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠে। তবে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এই অডিওকে “বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে তৈরি” বলে দাবি করেছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বক্তব্য

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (IDF) জানায়—“গাজায় ত্রাণ বিতরণের সময় কয়েকটি স্থানে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাধ্য হয়েই গুলি চালানো হয়।”
তাদের দাবি, গুলির লক্ষ্য ছিল না সাধারণ মানুষ, বরং কিছু “সহিংস ও উগ্র উপাদান” যারা ভিড়ের সুযোগে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছিল।

IDF আরও বলেছে, তারা প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করছে এবং অপ্রয়োজনীয় প্রাণহানি এড়াতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

জাতিসংঘ, রেড ক্রস, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ একাধিক মানবাধিকার সংস্থা এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার বলেছেন,
“ত্রাণ নিতে আসা অনাহারী মানুষের ওপর গুলি চালানো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন।”

রেড ক্রসের মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলীয় পরিচালক জানান, “এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে জরুরি হলো নিরাপদ ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং বেসামরিক মানুষদের রক্ষা করা।”

গাজার অবস্থ

প্রায় ৯ মাস ধরে চলমান ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের কারণে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ মারাত্মকভাবে সীমিত হয়ে পড়েছে। অনেক সময় আকাশপথে ত্রাণ ফেলা হলেও তা যথেষ্ট নয়। এ ছাড়া ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রিত সীমান্তগুলো দিয়ে ত্রাণ প্রবেশে নানা বাধা দেখা যাচ্ছে।

এ অবস্থায় খাদ্যের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ গাজাবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে দিয়েছে।

Scroll to Top